ইলমি মজলিসগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ, যে বসে না সে বুঝবে না!!
হিন্দিতে একটা উক্তি আছে
“সোহবতসে সাহাবা মিলে, কিতাব পড়নেছে সাহাবা নেহি মিলতাহে”
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সোহবতে ছিলেন বলেই উনারা সাহাবা হলেন, এমনিতেই তো আর না!!!
আমার জীবনে বেশ কিছু ইলমি বৈঠক আছে যেগুলো অন্তরে প্রভাব ফেলেছিল ম্যাজিকের মত!!
একটা ছিল হায়াদ্রাবাদের শায়েখ ইয়ার বাইগের ইলমি কনফারেন্স!
আর ইমান নবায়নের ঢাকার নাসিল শাহরুখের ইমান সিরিজের দারস।
তবে সবক’টা ছাড়িয়ে স্যার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ) এর সোহবত আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া! স্যার আমাদের অবিভাবকের মত ছিলেন তখন!! আমরা কয়জন পথহারা মানুষকে পথ দেখিয়েছিলেন স্যার!
স্যার এর সাথে একসাথে রাতে থাকারও অভিজ্ঞতা ছিলো আলহামদুলিল্লাহ। ওই দিনগুলোর কথা ভুলতে পারি না!
স্যারের প্রতি এতটা টান ছিলো যে মৃত্যুর খবর শুনেই অবচেতন মনে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়েছিল!!!
এখন খুব একটা ইলমি দারসে বসা হয় না, নানা অজুহাতে মিস করি! তবে বসা যে কতটা জরুরী, গত শনিবারের শায়েখ বিলাল মাদানির বৈঠকে বসে আবার প্রমাণিত হলো!!!
সত্যিকার আলেমদের সাথে বসলে বুঝা যায় জ্ঞানের ঘাটতি আর শূন্যতা।
শায়েখ ‘তাওহীদের’ এমন ডেফিনেশন দিলেন যে জীবনে ‘তাওহীদকে’ ওরকম করে ভাবিনি!!!
তাওহীদের নলেজ এমন একটা নলেজ যত জানবেন তত সুখী হবেন!!
শায়েখ বললেন সত্যিকারের তাওহীদের নলেজ যার আছে সে সুখেও সুখী আর দুঃখেও চরম সুখী। মুমিনদের জীবনে দুঃখ বলতে কিচ্ছু নেই!!! পৃথিবীতে হারানোর কিচ্ছু নেই।
আল্লাহকে কাজে, নামে, গুণে বৈশিষ্ট্যে একক মানা আর বান্দার সকল ইবাদত শুধুমাত্র তার জন্য করাযই হলো ‘তাওহীদ’।
কোন লোক ঘুষ খেলো, তার মানে সে তাওহীদ বুঝলো না; বুঝলে ঘুষ খেতো না! ওই যে বান্দার সকল কাজই তো ইবাদত, তাহলে সে ঘুষ, সুদ কিভাবে খায়!?
আপনি হারাম কিছু করলেন, মানে হলো আল্লাহকে চিনলেন না, চিনলে তো করতেন না!!!
অন্ধ, চক্ষুষ্মান, কালো, সাদা, গরীব, ধনী সব আল্লাহর সৃষ্টি। আল্লাহ সুবহান ওতাআ’লার তাওহীদ বুঝলে বান্দা কখনো এসবে ভেদাভেদ করে না! আমার রব যেরকম ইচ্ছে সৃষ্টি করেছেন!
বরং এসবে ভেদাভেদ করা মানে হলো আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা! যা মারাত্মক শিরক!!!!
আপনার রিযিক দরকার, তিনি “আর রাজ্জাক” রিযিক দাতা! আপনার সন্তান দরকার তিনি “আল ওয়াহাব” সন্তান দাতা; আপনি দারিদ্র্যমুক্ত হতে চান? তিনি আল গনিউন হামিদ। আপনি ন্যায় বিচার চান? তিনি “আজিজুল হাকিম” এমন আপনি যাই চান সবি উনার গুণের মধ্যে পাবেন!!!
শায়েখ আরো কিছু আলোচনা করেন তার মধ্যে অন্যতম, দ্বাইয়িদের গুণাবলি কী?
দ্বাইয়িদের আখলাক হবে রসুলুল্লাহ (সঃ) এর মত, দ্বাইয়িরা হবেন বিনয়ী, ধৈর্যশীল, মুয়ামিলাতে স্বচ্ছ!
আর পরিশেষে বললেন দাওয়াত ফরজ। আপনি যা জানেন তা অন্যেকে জানানো ফরজে আ’ইন। আর বাতিলের বড় দল দেখে খুশি হওয়ার কিচ্ছু নেই, বাতিলরা একের নিচে এক আর হক্বরা একের পাশে এক!!!
আল্লাহ সুবহানা তাআ’লা আমাদের সত্য জানার, মানার এবং অন্যকে পৌঁছে দেওয়ার তৌফিক দান করুন।
আমিন
লেখকঃ রিজওয়ান জাহান তন্ময়।